১। যুদ্ধ কিংবা শান্তিকালীন যে কোন পরিস্থিতিতে একটি দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে তার জনগোষ্টীকে মান সম্পন্ন সুশিক্ষায় গড়ে তোলা। আর এ কাজটি বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে দক্ষভাবে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সম্পন্ন করেছে তার মধ্যে রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ অন্যতম। সঠিকভাবে সুশিক্ষা প্রদানের এ কাজটি করতে হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকের যৌগসূত্র হতে হবে খুবই খাঁটি ও নিবিড়, থাকতে হবে স্বত:স্ফূর্ত উদ্যোগ। আর তাতে থাকতে হবে দেশ প্রেমের ছোঁয়া, একই সাথে পরিবার ও সমাজের প্রতি সকলের অঙ্গীকার ও দায়বদ্ধতা।
২। এখানে শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠান এবং তার সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারিকে একই অঙ্গ হিসেবে ধরে নিতে হবে। ভৌত অবকাঠামো প্রতিষ্ঠানে নিশ্চিত করা পাঠদানের পূর্বশর্ত। একই সাথে এই কাঠামোর সঠিক পরিচালনা ও ব্যবহারের জন্য দক্ষ প্রশিক্ষক ও পরিষেবা কর্মচারি প্রয়োজন। রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ এক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন অত্যাধুনিক মাল্টিমিডিয়া সুসজ্জিত শ্রেণিকক্ষ সুবিধা, সম্মিলিত বিশাল মাঠ-রাইড, পাশাপাশি দক্ষ শিক্ষক ও সহায়তা স্টাফ নিয়ে পাঠদানে অঙ্গীকারবদ্ধ। এক্ষেত্রে আমরা দিন দিন উন্নতি করে আমাদের সীমাবদ্ধতার উর্দ্ধে উঠার চেষ্টা করছি।
৩। প্রতিষ্ঠানের সকল সুবিধা ও পরিবেশ নিশ্চিতের পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থা যাদের জন্য সাজানো তারা হচ্ছে আমাদের সুপ্রিয় শিক্ষার্থীরা;
(ক) শিক্ষার্থীরা তোমাদের শেখার আগ্রহ বাড়াতে হবে। ক্লাশে আসা, কার্যকরী অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
(খ) লাইব্রেরিতে যেতে হবে। পাঠ্যপুস্তক ও পাঠ্যপুস্তক সহায়ক বই এর বাহিরের ভিন্ন ভিন্ন মেজাজের বই পড়তে হবে। বর্তমান ইন্টারনেট-কম্পিউটারের যুগে রাজেন্দ্রপুরের শিক্ষার্থী নিজেকে অক্সফোর্ড কিংবা হার্ভাডের শিক্ষার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বি মনে করে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। তাই নিজেকে শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকে সীমাবদ্ধ না রেখে সকল মেজাজের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরিতে নিজের আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে উপযুক্ত বই চলতি পথে বের করে তা সংগ্রহ করে পড়তে হবে। প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট সফ্টওয়্যারের সদ্ব্যবহার করতে হবে।
(গ) শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পূর্বশর্ত হিসেবে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। এজন্য নিয়মিত প্রাত:সমাবেশে অংশগ্রহণ, খেলাধূলায় অংশগ্রহণ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের মাঠে সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত দক্ষ কোচ দ্বারা রক্ষণাবেক্ষন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়ে থাকে, তাই এর সদ্ব্যবহারে মনোযোগী হতে হবে।
(ঘ) বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্বের সামরিক বাহিনীর মধ্যে একটি গৌরবোজ্জ্বল ব্যান্ডে পরিণিত হয়েছে। অত্র প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের অফিসার পদে নিয়োগের নিমিত্তে বিএনসিসি সহ নানা ধরণের নির্দেশিকা ও শারীরিক চর্চার মাধ্যমে তাদেরকে উপযোগী করে গড়ে তুলে। শিক্ষার্থীদের এ সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে।
৪। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মেলবন্ধন নিশ্চিত করেন আমাদের সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দ;
(ক) ডিজিটাল গ্যাজেট আসক্তি থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রেখে নিরাপদে প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত নিশ্চিত করা অভিভাবকদের বড় দায়িত্ব।
(খ) একই সাথে মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতে শিক্ষার্থীদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে অভিভাবকদের রাখতে হবে। সময় সময় সন্তানের পরিবর্তনাদি শিক্ষকদের সাথে ভাগাভাগি করতে হবে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে নির্ভরশীলতা বাড়বে। যা লেখাপড়ার একটি সুন্দর পরিবেশময় পরিবার গড়তে সাহায্য করবে।
(গ) খেলাধূলায় সুযোগ সদ্ব্যব্যবহারে শিক্ষার্থীদের উৎসাহী করতে হবে।
৫। সর্বোপরি, অধ্যক্ষের আসনে আমাকে বসার সুযোগ দানের জন্য সম্মাণিত সেনাবাহিনী প্রধানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি আমাকে বিশ্বাস করে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীদের অত্র প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের জন্য অভিভাবক এবং তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য আমার সহকর্মীদের প্রতি আমি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। মহান আল্লাহ জ্ঞান আহরণ ও জ্ঞান বিতরণের মহৎ কাজটি সুষ্ঠুভাবে করার তৌফিক আমাকে দিন- আমিন!
লে. কর্নেল মোঃ মিজানুর রহমান মিজান, পিএসসি, জি, আর্টিলারি
অধ্যক্ষ
© Copyright 2023 - Rajendrapur Cantonment Public School & College. All Rights Reserved. Developed by Desh Universal (Pvt.) Limited. Like us on Facebook